পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি? পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় সম্পর্কে জানুন
বন্ধ্যাত্ব কথাটি শুনলেই মনে হয় যেন এটি শুধুমাত্র নারীদের সমস্যা হয়ে থাকে, কিন্তু তা নয়! বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি হতে পারে পুরুষদেরও। বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটির ৪০% থেকে ৫০% ক্ষেত্রে দেখা যায় পুরুষের প্রজনন ক্ষমতায় সমস্যা থাকার কারণেই হয়ে থাকে।
পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি কাকে বলেঃ
প্রথমেই আমাদের জানা উচিত বন্ধ্যাত্ব কি। বন্ধ্যাত্ব নারী বা পুরুষ যেকোনো একজনের অথবা উভয়ের সমস্যার কারণেই হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে এক বা দুই বছর স্বামী-স্ত্রী কোনো প্রকার গর্ভরোধক ব্যবস্থা ছাড়ায় শারীরিক মেলামেশা করার পরেও যদি সন্তান ধারণে ব্যর্থ হয় তাহলেই তাকে বন্ধ্যাত্বতা বা ইনফার্টিলিটি বলে। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব তখনই বলা হয়, যদি কোনো দম্পতির মধ্যে স্ত্রীর সন্তান ধারণের সকল গুণাবলি বা সক্ষমতা থাকা স্বত্বেও একমাত্র পুরুষের জনন্তান্ত্রিক সমস্যার কারণেই যদি সন্তান ধারণে ব্যর্থ হয়।
আরো পড়ুনঃ পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার শতভাগ কার্যকরী চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন
প্রায় ৭ জনের মধ্যে ১জন দম্পতি বন্ধ্যাত্বতা বা ইনফার্টিলিটি ভুক্ত ভুগী হয়ে থাকেন ,এই দম্পতির প্রায় অর্ধেকেরই বন্ধ্যাত্বের মুল কারণই পুরুষের অক্ষমতা হয়ে থাকে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব কিভাবে হতে পারেঃ
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের বা ফার্টিলিটির একটি প্রধান অংশ নির্ভর করে। যেগুলো
- পুরুষত্বহীনতা বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনঃ যেখানে মানুষ তার ইরেকশন বজায় রাখতে বা বিকাশ করতে পারে না।
- দুর্বল লিবিডোঃ যখন একজন পুরুষের যৌন মিলনের ইচ্ছা থাকে না।
- শুক্রাণুর গতিশীলতার হার কমঃ এর অর্থ অস্বাস্থ্যকর শুক্রাণু কোষ যা সাঁতার কাটতে অক্ষম।
- কম শুক্রাণুর সংখ্যা বা বীর্যের পরিমাণে শুক্রাণু কোষের কম ঘনত্ব।
- কম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বা পুরুষের যৌন হরমোনের পরিমাণ কম।
এছাড়াও স্বাস্থ্য, জেনেটিক্স রোগ এবং ফিটনেস এর প্রভাবেও হতে পারে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণসমূহঃ
পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের মধ্যে সবচেয়ে সুস্পষ্ট লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে,
- অপরিমিত বীর্যপাত বা স্বল্প পরিমাণে বীর্যপাত হওয়া।
- দৈহিক মেলামেশায় অনীহা ভাব প্রকাশ পাওয়া।
- টেস্টিস ফুলে যাওয়া, ব্যথা, টিউমার বা দলা জাতীয় কিছুর অস্তিত্ব বুঝতে পারা।
- অস্বাভাবিক স্তন বৃদ্ধি বা গাইনাকোমাস্টিয়া রোগ দেখা দেওয়া।
- পরীক্ষায় প্রতি এম.এল. সিমেনে ১৫ লক্ষের কম বা প্রতি বীর্যপাতে ৩৯ লক্ষের কম স্পার্ম কাউন্ট হইলে।
- বারবার শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দিলে।
- শরীর বা মুখের চুল কমে যাওয়া দেখা দিতে থাকলে।
- হরমোন বা ক্রোমোসোমাল অস্বাভাবিকতার অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিলে।
পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের বা ইনফার্টিলিটি কারণ সমূহঃ
- অনেক সময় দেখা যায় বংশগত কিছু রোগের কারণে পুরুষদের ইনফার্টিলিটি হতে পারে। যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ক্লিয়েনফেল্টার সিন্ড্রোম, থ্যালাসেমিয়া, টাইপ-১ ডায়াবেটিস ইত্যাদি।
- অনেক সময় দেখা যায় আনহেলদি লাইফস্টাইল ইস্যু অতিরিক্ত তামাক সেবন, অতিরিক্ত ওজন, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া এগুলো কিন্তু ইনফার্টিলিটির একটি বড় কারণ হতে পারে।
- অনেক সময় দেখা যায় নেশা জাতীয় দ্রব্য কোকেইন, ইয়াবা, গাজা, মদ্যপান ইত্যাদির অত্যাধিক ব্যবহার কিন্তু ইনফার্টিলিটির একটি বড় কারণ হতে পারে। কোকেইন, গাজা অত্যাধিক ব্যবহারে স্পার্ম কাউন্ট এবং স্পার্ম এর মান উভয়ই কমে যায়।
- কেউ যদি অতিরিক্ত স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবন করে জিম করেন এবং বডি বিল্ডিং এর জন্য ইনজেক্টেবল স্টেরয়েড ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব তৈরি হতে পারে।
- অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত এংজাইটি বা অ্যান্টি ডিপ্রেশনের ঔষধ সেবন, ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ সেবনেও স্পার্ম কাউন্ট কমে যায় এর ফলে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
- অনেক সময় দেখা যায় পেশাগত বিভিন্ন কারণ যারা প্রতিনিয়ত এক্স-রে বা রেডিয়েশন এর সামনে থাকেন এবং অন্যান্য ভারী ধাতুর কারখানায় কাজ করেন, বিভিন্ন রকম বিষাক্ত কেমিক্যাল বা সার কারখানায় কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
- অনেক সময় অণ্ডকোষ বা টেস্টিস এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে স্পার্ম প্রোডাকশন কমে যায় সে ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
- অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন মেডিকেল কন্ডিশন টেস্টিকুলার টিউমার, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, ক্রোমোজোমাল ডিফেক্ট, ইনফেকশন, জন্মগত জননাঙ্গের ত্রুটি, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা ধ্বজভঙ্গ ইত্যাদি কারণেও ইনফার্টিলিটি দেখা দিতে পারে।
- অনেক সময় যে কোনো প্রকার অ্যাক্সিডেন্ট বা ট্রমার কারণে টেস্টিস অথবা জননাঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হলে বন্ধ্যাত্বের বা ইনফার্টিলিটি দেখা দিতে পারে।
পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের বা ইনফার্টিলিটি পরীক্ষা নিরীক্ষাঃ
বিভিন্ন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের বা ইনফার্টিলিটি নির্ণয় করা যায়। যেমন,
সিমেন অ্যানালাইসিসঃ এই পরিক্ষার মাধ্যমে স্পার্ম কাউন্ট, স্পার্ম এর গুণগত মান বুঝতে পারা যায়।
আরো পড়ুনঃ ইরেক্টাইল ডিসফাংশন কি? ইরেক্টাইল ডিসফাংশন দূর করার শতভাগ কার্যকরী চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন
টেস্টিকুলার বায়োপসিঃ সিমেন অ্যানালাইসিসে স্পার্ম কাউন্ট শুন্য বা কম থাকলে তখন এই পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে দুটি লক্ষ্য সাধন হয়, স্পার্ম এর অস্বাভাবিকতা নির্ণয় এবং আই ভি এফ চিকিৎসার জন্য স্পার্ম সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
হরমোনাল প্রোফাইলঃ স্পার্ম প্রোডাকশন এ বিভিন্ন রকম হরমোন প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই জন্য পরীক্ষার মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন হরমোনের সঠিক মাত্রা বের করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমেও জননাঙ্গের অস্বাভাবিকতা নির্ণয় করা হয়ে থাকে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিরাময়ের উপায়ঃ
- স্পার্ম কাউন্ট কম থাকলে হরমোনাল থেরাপির মাধ্যমে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি করা যায়।
- ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আই ভি এফ) পদ্ধতি এখন ইনফার্টিলিটি চিকিৎসার সবচেয়ে জনপ্রিয় পন্থা। এর মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলন ঘটানো হয়।
- উৎপাদন থেকে শুরু করে বীর্যপাত পর্যন্ত শুক্রাণুর যাত্রাপথের কোথাও কোন বাঁধা থাকলে তা অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক করা যায়।
- নেশাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের অভ্যাস থাকলে সে অভ্যাস ত্যাগ করা উচিৎ।
- আদর্শ শারীরিক ওজন বজায় রাখা।
- ভ্যাসেকটমি রিভার্সাল, ভাসোপিডিডাইমোস্টমি এবং স্পার্ম রিভার্সালের মতো সার্জারি।
ফার্টিলিটি বুস্টিং ডায়েট প্ল্যানঃ পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য সেরা প্রতিকার
ভারসাম্যহীন এবং অনুপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস সরাসরি শুক্রাণুর গুণমান এবং গণনাকে প্রভাবিত করতে পারে।পুরুষরা শুক্রাণুর পরিমাণ এবং গুণমান উন্নত করতে একটি উর্বরতা খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করতে পারেন। সুতরাং, পুরুষদের উর্বরতা বৃদ্ধিকারী খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করা উচিত যাতে নিম্নলিখিত খাদ্যগুণ রয়েছে।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারঃ ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে এমন পুরুষদের শুক্রাণুর গতিশীলতা কম থাকতে পারে পুরুষ বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। এই ধরনের পুরুষদের উর্বরতা বৃদ্ধিকারী খাদ্য পরিকল্পনায় লাল মাংস, তৈলাক্ত মাছ এবং ডিমের কুসুমের মতো ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আরো পড়ুনঃ পুরুষের স্পাম বা শুক্রাণু বৃদ্ধির ২০টি যাদুকরী খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ সেলেনিয়ামে শুক্রাণুর গুণমান বাড়াতে সাহায্য করে এবং এইভাবে পুরুষদের উর্বরতা সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। ভিটামিন ই এর সাথে সেলেনিয়াম খাওয়া শুধুমাত্র শুক্রাণু চলাচলে সহায়তা করে না এমনকি অঙ্গসংস্থানবিদ্যাকেও সাহায্য করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে মাংস, মাছ, ডিম, বীজ এবং বাদাম।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবারঃ পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিরাময়ের জন্য জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্য থেকে যথেষ্ট পরিমাণে জিঙ্ক শুক্রাণুর সংখ্যা এবং শুক্রাণুর গতিশীলতা উন্নত করতে পারে।
মসুর ডাল অবশ্যই খাওয়া উচিতঃ ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি পুরুষদের সুস্থ শুক্রাণু তৈরি করতে অক্ষম করে তোলে। শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গুণমান বাড়াতে, পুরুষরা ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। যেমন ডিম, লেবু, সবুজ শাক এবং মসুর ডাল খাওয়া সবচেয়ে ভালো কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট থাকে, যা শুক্রাণুর ক্রোমোজোমে অস্বাভাবিকতা কমায়।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বে অতিরিক্ত ওজন এবং স্থুলতা কমানোর উপায়ঃ
অতিরিক্ত ওজন এবং মেদাধিক্য পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কম এবং হরমোনের ওঠানামা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়, যা শুক্রাণুর আকৃতি এবং নড়াচড়ারও ক্ষতি করতে পারে।
ওষুধ এবং ব্যায়াম পুরুষদের ওজন কমাতে এবং শুক্রাণুর সংখ্যা ও ঘনত্ব উন্নত করতে সাহায্য করে। ওজন কমানোর জন্য সুষম খাদ্য পরিকল্পনা টেকসই ফলাফলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
- বন্ধ্যাত্বের সমস্যাযুক্ত পুরুষদের ফ্যাড এবং ক্র্যাশ ডায়েট এড়ানো উচিত কারণ তাতে পুষ্টির ঘাটতি ঘটাতে পারে।
- বন্ধ্যাত্বের সমস্যাযুক্ত পুরুষদের জন্য নিখুঁত ওজন কমানোর ডায়েট প্ল্যানের মধ্যে বেশি পরিমাণে ফাইবার এবং কিলোজুল কম সেই সব শাকসবজি বেশি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
- বন্ধ্যাত্বের সমস্যাযুক্ত পুরুষদের লবণ, চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ।
- বন্ধ্যাত্বের সমস্যাযুক্ত পুরুষদের স্ন্যাক জাতীয় খাবার, অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় এবং কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন। কেননা এই সব খাবার অতিরিক্ত ওজন এবং মেদাধিক্য বাড়িয়ে দেয়।
- বন্ধ্যাত্বের সমস্যাযুক্ত পুরুষদের ওজন কমানোর ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করার সময় কমপক্ষে ৩ লিটার পানি খাওয়ার মাধ্যমে হাইড্রেটেড থাকাও অপরিহার্য অংশ।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার জন্য খাদ্য সমূহঃ
- সূর্যমুখী ফুলের বীজঃ বন্ধ্যাত্ব দূর করতে যেসব উপাদান বেশি কার্যকরী সেগুলো হলো সেলেনিয়াম, ফোলেট, ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ এসব উপাদানই সূর্যমুখী ফুলের বীজে রয়েছে।
- কুমড়ো বীজঃ কুমড়ো বীজের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এবং আরও রয়েছে প্রয়োজনীয় এসিড ও ফাইটোসটেরল যা পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া এতে থাকা টেসটোসটেরোন উপাদান হরমোনের সিরামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং একই সঙ্গে শুক্রাণুর পরিমাণ, ক্ষিপ্রতা ও জীবনশক্তি বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
- টমেটোঃ লাইকোপেন নামক উপকারী উপাদান রয়েছে টমেটোতে। এছাড়া টমেটোতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সহায়তা করে।
- ডার্ক বা ব্ল্যাক চকলেটঃ ডার্ক বা ব্ল্যাক চকলেটে অ্যামাইনো এসিড এল-আরজিন রয়েছে,যা শুক্রাণুর মাত্রা ও বীর্যের পরিমাণ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এছাড়া এতে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে।
- ভিটামিন সি জাতীয় ফলঃ স্ট্রবেরি, আঙুর এবং যে কোনো লেবুজাতীয় ফলেই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি শুক্রাণু মান উন্নত করতে পারে ভিটামিন সি।
- ডাল এবং বিনসঃ সন্তানধারণের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনগুলোর ভারসাম্য রক্ষা করতে ফাইবার, ফোলেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার প্রধান উৎসই হলো বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং বিনস।
এছাড়া ফলিক অ্যাসিড ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবারও বন্ধ্যাত্ব দূর করতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেনঃ
প্রায় ২৫% ক্ষেত্রে পুরুষদের ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্বের সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এটি এমন একটি রোগ যা ঘরে বসে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়, তাই উপরে উল্লেখিত যেকোনো সমস্যার মুখোমুখি হলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন রকম কবিরাজি চিকিৎসার সয়লাব দেখা যায়, এসবে বিশ্বাস করলে ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছুই হবে না! বরং দেরি করার কারণে এবং ভুল চিকিৎসায় অনেক সময় নিরাময়যোগ্য সমস্যাও স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। মেডিকেল সাইন্স অনেক দূর এগিয়েছে, উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে।
সময় থাকতে সচেতন হোন এবং লজ্জা ভুলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সন্তান না হওয়ার জন্য একতরফা ভাবে স্ত্রীকে দোষারোপ করবেন না, সবার প্রথমে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্বের সঠিক কারণ খুঁজে বের করুন এবং উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url