আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে জানুন

যদি আপনার একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট থেকে থাকে, আর যদি আপনি জানতে চাচ্ছেন যে আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে তাহলে আজকে এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। সুতরাং মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়ুন।
আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে  জানুন
প্রত্যেক ব্লগারদের কাছে ব্লগ একটি স্বপ্নের নাম হয়ে থাকে। ব্লগিং যেমন একজন ব্লগারকে  নাম ও খ্যাতি এনে দেয়, আবার একই ভাবে অর্থ উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবেও কাজ করে থাকে। সুতরাং একজন লেখকের ব্লগিং ক্যারিয়ার টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই অনলাইনে তার ইতিবাচক বিচরণ অতীব জরুরী একটি বিষয় হয়ে থাকে, আর এই ক্ষেত্রে ব্লগিং হচ্ছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি প্লাটফর্ম।

বর্তমানে অনেকেই নানা স্বপ্ন নিয়ে আসেন ব্লগিং এ ক্যারিয়ার জয় করার জন্য, কিন্তু বর্তমানে অনেকেই  ব্লগ প্রকাশ করার সঠিক নিয়ম-কানুন জানেন না এবং ব্লগিং এর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অনুসরণ করে থাকেন না যার কারণে বর্তমানে অনেকের ব্লগিং ক্যারিয়ার মুকুলেই ঝড়ে যায়। এজন্য একজন নতুন ব্লগারকে জানতে হবে, যেসব ভুলের কারণে তার ব্লগিং ক্যারিয়ার ধ্বংস হতে পারে। আজকে এই পোস্টে আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে  জানুন

একজন নতুন ব্লগার হিসেবে যখন আপনি প্রথম এই প্লাটফর্মে আসবেন,তখন আপনার স্বাভাবিকভাবেই অনেক কিছুই অজানা থাকবে। আজকে আমরা সেই বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করব, যাতে করে আপনি আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারের ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে পারেন এবং এর পরে আপনার ওয়েবসাইটে আগের তুলনায় আরো অনেক বেশি ট্রাফিক আসবে যা আপনার সফলতা আগে থেকে অনেক  বাড়িয়ে দিবে।

১. নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহার করা

একজন ব্লগারের কাছে একটি ওয়েবসাইট হচ্ছে তার একটি স্বপ্ন। কেননা এর সাথে জড়িয়ে থাকে অনেক আবেগ, ত্যাগ এবং পরিশ্রম। কিন্তু আপনার এই সকল পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর না আসে। এক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইটে ট্রাফিক না আসার অন্যতম প্রধান একটি কারণ হচ্ছে যদি অতি নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহার করা থাকে।

এই ক্ষেত্রে বর্তমানে বেশির ভাগ নতুন ব্লগারই কোন না কোনভাবে নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহার করে থাকেন। আর এই নিম্নমানের হোস্টিং আপনার ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক না করানোর জন্য একমাত্র দায়ী হয়ে থাকেন।

নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
  • ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতা হ্রাস: নিম্নমানের হোস্টিং প্রদানকারীরা প্রায়শই সীমিত ব্রান্ডউইথ এবং প্রসেসিং শক্তি সরবরাহ করে। এর ফলে ওয়েবসাইট লোড হতে বেশি সময় নিতে পারে, বিশেষ করে যখন ট্র্যাফিক বেশি থাকে। ধীর লোডিং এর সময় ব্যবহারকারীদের হতাশ করে তুলতে পারে এবং তারা আপনার ওয়েবসাইট ত্যাগ করতে পারে। এটি সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিংয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ সার্চ ইঞ্জিন দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইটগুলিকে পছন্দ করে থাকে।
  • ডাউনটাইম বৃদ্ধি: নিম্নমানের হোস্টিং প্রদানকারীরা প্রায়শই অবিশ্বস্ত সার্ভার ব্যবহার করে যা নিয়মিতভাবে ক্র্যাশ হতে পারে। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যেতে পারে, যা আপনার ওয়েবসাইটের আয় এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাস করতে পারে।
  • নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি: নিম্নমানের হোস্টিং প্রদানকারীরা প্রায়শই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদান করে না। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট হ্যাকিং, ম্যালওয়্যার এবং অন্যান্য অনলাইন হুমকির ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ডেটা লঙ্ঘন গুরুতর আর্থিক এবং আইনি পরিণতি বহন করতে পারে।
  • খারাপ গ্রাহক পরিষেবা: নিম্নমানের হোস্টিং প্রদানকারীরা প্রায়শই খারাপ গ্রাহক পরিষেবা প্রদান করে। যখন আপনার সমস্যা হয় তখন তাদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া কঠিন হতে পারে। এটি হতাশাজনক এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে।
এছাড়াও হোস্টিং যদি মানসম্মত না হয়, বেশিরভাগ সময়েই আপনার ওয়েবসাইট ডাউন থাকবে। অর্থাৎ,ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবে না। যার ফলে আপনার ওয়েবসাইটটি গুগলের কাছে কোয়ালিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না। সুতরাং টাকা একটু বেশি খরচ হলেও ভালো মানের হোস্টিং ব্যবহার করুন।

২. ফ্রি ডোমেইন ব্যবহার করা

যখন আপনি প্রফেশনালি আপনার ব্লগটিকে দাঁড় করাতে যাবেন, তখন আপনাকে ফ্রি ডোমেইনের ব্যবহার মাথা থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রিমিয়াম ডোমেইনের বদলে ফ্রি ডোমেইন ব্যবহার করলে তা গুগলে সার্চ রেজাল্টে অনেক প্রভাব ফেলে। সার্চ ইঞ্জিনে সাধারণত ফ্রি ডোমেইনগুলোর সাইট কম আসে। ফলে এখান থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনাও খুবই কম।

বর্তমানে অনেককেই দেখা যায় যে প্রফেশনাল লেভেলে প্রবেশ করেও blogspot বা wordpress এর ফি ডোমেইন ব্যবহার করেন। যা কিনা অনেক বড় একটি ভুল। একটা কথা মনে রাখবেন, যে ওয়েবসাইট দিয়ে আপনি টাকা উপার্জন করবেন, সেই ওয়েবসাইটের পেছনে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিনিয়োগ করা উচিত, নয় তো তার ফল কখনোই খুব একটা ভালো হয় না।

ফ্রি ডোমেইন ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
  • নিয়ন্ত্রণের অভাব: ফ্রি ডোমেইন ব্যবহারকারীদের ডোমেইন নামের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ডোমেইন প্রদানকারী যেকোনো সময় ডোমেইন স্থগিত করতে পারে, সাব-ডোমেইন তৈরির সুযোগ সীমাবদ্ধ করতে পারে, এমনকি ব্যবহারকারীর ডেটা মুছে ফেলতে পারে। ফ্রি ডোমেইন নাম পরিবর্তন, নেমসার্ভার পরিবর্তন, অথবা অন্য ডোমেইন রেজিস্ট্রারের কাছে স্থানান্তর করা সম্ভব নাও হতে পারে।
  • ব্র্যান্ডিং ও SEO-র উপর প্রভাব: ফ্রি ডোমেইন, বিশেষ করে সাবডোমেইন, ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ডিং এবং SEO-কে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অনুসন্ধান ইঞ্জিন ফ্রি ডোমেইনকে কম বিশ্বস্ত বলে মনে করতে পারে এবং ওয়েবসাইটের র‌্যাঙ্কিং কমিয়ে দিতে পারে। 
  • বিজ্ঞাপন এবং স্প্যাম: অনেক ফ্রি ডোমেইন প্রদানকারী ডোমেইনে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে।এই বিজ্ঞাপনগুলি ওয়েবসাইটের চেহারা নষ্ট করে এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে বিরক্তিকর করে তুলতে পারে।কিছু ক্ষেত্রে, বিজ্ঞাপনগুলি ওয়েবসাইটের লোডিং গতিও ধীর করে দিতে পারে।এছাড়াও, ফ্রি ডোমেইনগুলি প্রায়শই স্প্যাম এবং অন্যান্য অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত থাকে, যা ওয়েবসাইটের খ্যাতিকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
  • নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা ঝুঁকি: ফ্রি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার সময় ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য ফাঁস বা অপব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্রি ডোমেইনগুলি হ্যাকিং এবং অন্যান্য সাইবার হামলার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
  • দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের অস্থিরতা: ফ্রি ডোমেইন সেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, নীতি পরিবর্তন হতে পারে, অথবা ডোমেইন নামগুলি পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে। এর ফলে ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং অনলাইন উপস্থিতি হারিয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে একটি .com ডোমেইন ৯০০ টাকায় পাওয়া যায়। অনেক ডোমেইন প্রোভাইডার আছেন, যারা ৯০০ টাকার কমেও .com ডোমেইন প্রোভাইড করে থাকেন। এছাড়া .net, .info এবং .org ডোমেইনগুলোও অল্প দামে পাওয়া যায়। তাই আপনি অল্প কিছু টাকা খরচ করলেই হয়তো একটি ভালো মানের প্রিমিয়াম ডোমেইন কিনতে পারবেন।

আর এই প্রিমিয়াম ডোমেইন ব্যবহার করলে যে শুধু আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসবে তা কিন্তু  নয়, এটা আপনার ওয়েবসাইটকে প্রফেশনাল একটি লুকিং এনে দেবে, যার ফলে আপনার সাইটের প্রতি ভিজিটরদের আকর্ষণ এবং আস্থা দুটোই বাড়বে।

৩. নিম্ন মানের থিম ব্যবহার করা

প্রফেশনাল ব্লগের জন্য নিম্ন মানের থিম ব্যবহার করা মারাত্মক একটি ভুল সিদ্ধান্ত। সাধারণত কিছু ফ্রি এবং নিম্ন মানের থিমে প্রফেশনাল লেভের কোডিং করা থাকে না। যার ফলে ওই থিমগুলো এসইও ফ্রেন্ডলি হয় না।অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে থিমের কোডিং এর সাথে এসইও’র কি সম্পর্ক? হ্যাঁ, সম্পর্ক আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিম্ন মানের থিমগুলোতে কোডিং এর স্টান্ডার্ড মেইনটেইন করা হয় না।

অপরদিকে এ ধরনের থিমগুলোতে আপডেট আসার সম্ভাবনা কম থাকে। অনেক ক্ষেত্রে থাকেই না। এ থিমগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্লো হয়। ফলে সাইটের লোডিং স্পীড দীর্ঘ করে। তাই নতুন ব্লগার হিসেবে নিম্নমানের থিম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার চেষ্টার করুন। অল্প কিছু টাকা খরচ করে প্রিমিয়াম থিম কিনে ফেলুন। Themeforest থিম বিক্রির জনপ্রিয় একটি প্লাটফরম।

নিম্ন মানের থিম ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
নিম্নমানের থিম ব্যবহার করা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি খারাপ সিদ্ধান্ত হতে পারে। এটি আপনার দর্শকদের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, আপনার SEO ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং এমনকি আপনার ওয়েবসাইটকে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা (UX) এর উপর প্রভাব
  • দৃশ্যমানভাবে অস্বস্তিকর: নিম্নমানের থিমগুলোতে প্রায়শই অসঙ্গতিপূর্ণ ডিজাইন, নিম্নমানের টাইপোগ্রাফি এবং নিম্নমানের ছবি থাকে। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি অপ্রীতিকর এবং অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারে।
  • ব্যবহারে অসুবিধা: নিম্নমানের থিমগুলোতে প্রায়শই নেভিগেশন সমস্যা থাকে, লেআউট অসুবিধাজনক হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য হতাশাজনক হতে পারে এবং ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে পারে।
  • অ্যাক্সেসিবিলিটি সমস্যা: নিম্নমানের থিমগুলো প্রায়শই অ্যাক্সেসিবিলিটি নির্দেশিকা মেনে চলে না, যার ফলে প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করা কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) এর উপর প্রভাব
  • খারাপ র‌্যাঙ্কিং: নিম্নমানের থিমগুলো প্রায়শই ধীর লোডিং সময়, খারাপ কোড এবং অপ্টিমাইজ করা হয়নি এমন কন্টেন্ট থাকে। এটি ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন র‌্যাঙ্কিংকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে কম ট্র্যাফিক এবং কম রূপান্তর হতে পারে।
  • মোবাইল-বান্ধব নয়: অনেক নিম্নমানের থিম মোবাইল ডিভাইসের জন্য অপ্টিমাইজ করা হয় না, যার ফলে মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য একটি খারাপ অভিজ্ঞতা তৈরি হয়। এটি আরও SEO সমস্যা এবং হ্রাসপ্রাপ্ত রূপান্তরের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
সুরক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণের ঝুঁকি
  • নিরাপত্তা ঝুঁকি: নিম্নমানের থিমগুলিতে প্রায়শই নিরাপত্তা ছিদ্র থাকে যা হ্যাকাররা আপনার ওয়েবসাইট আক্রমণ করতে ব্যবহার করতে পারে।
  • অপ্রচলিত কোড: নিম্নমানের থিমগুলিতে প্রায়শই অপ্রচলিত কোড থাকে যা আপনার ওয়েবসাইটকে ভবিষ্যতের ওয়েব ব্রাউজার এবং প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও করে তুলতে পারে।
  • সীমিত সহায়তা: নিম্নমানের থিমগুলির সাথে প্রায়শই সীমিত বা কোনও গ্রাহক সহায়তা থাকে না, যার অর্থ আপনার যদি কোনও সমস্যা হয় তবে আপনাকে নিজেই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
উচ্চমানের, প্রিমিয়াম থিমে বিনিয়োগ করা সর্বদা ভালো, যা আপনাকে একটি আকর্ষণীয়, কার্যকরী এবং নিরাপদ ওয়েবসাইট তৈরি করতে সাহায্য করবে।

৪. নিম্নমানের আর্টিকেল পোস্ট করা

অনেক ক্ষেত্রেই নতুন ব্লগার এবং অনেক পুরোনো ব্লগারদেরও ব্লগে নিম্নমানের আর্টিকেল পোস্ট করতে দেখা যায়।দেখা যায় অধিকাংশ সময়েই তারা আর্টিকেল লেখার ন্যূনতম নিয়মগুলো মেইনটেইন করে থাকেন না। যেখানে একটি আর্টিকেল লিখতে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। সেখানে একটি ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে হাতে ১ঘন্টা এবং ২ঘণ্টা সময় নিয়ে কাজে নেমে পরা একদমই উচিত নয়।

আপনাকে মনে রাখতে হবে, ব্লগে প্রকাশিত আর্টিকেলের গুণগত মানই হচ্ছে আপনার ব্লগের পরিচয় হয়ে থাকে। আর  আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারের সফলতা পাওয়ার জন্য এই দিকে ভালো ভাবে লক্ষ্য দেয়াটা অনেক জরুরি একটি বিষয়। এক্ষেত্রে আপনি যখন একটি ভালো ও সমৃদ্ধ আর্টিকেল লিখবেন, আপনাকে অবশ্যই অনেক তথ্য রিচার্স করে লিখতে হবে।

নিম্নমানের আর্টিকেল ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
আপনাকে একটি  ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে হলে আরো ১০ টি ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে হবে, এ জন্য আপনার যথেষ্ট পরিমাণে সময় ব্যয় করতে হবে। কিন্তু যারা অল্প সময়েই অধিক সফলতা চায়, তারা আর্টিকেল লেখার পেছনে সময় দিতে চায় না। ফলে বিভিন্ন ব্লগ থেকে কপি-পেস্ট করে নিজের ব্লগে পাবলিশ করে দেয়। এ ধরনের নিম্নমানের আর্টিকেলগুলো গুগলের সার্চ রেজাল্টে আসে না। ফলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক পাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
  • সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস: নিম্নমানের আর্টিকেল আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ করতে পারে। পাঠকরা ভুল তথ্যের জন্য আপনার ওপর বিশ্বাস হারাতে পারে এবং ভবিষ্যতে আপনার সাইটে আর ফিরে নাও আসতে পারে। অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলো আপনার সাইটের র‌্যাঙ্কিং কমাতে পারে কারণ তারা নিম্নমানের সামগ্রীকে পছন্দ করে না।
  • SEO ক্ষতি: নিম্নমানের আর্টিকেল আপনার SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলো সহজেই বুঝতে পারে যে আপনার আর্টিকেলগুলো ভালো নয়, যার ফলে আপনার ওয়েবসাইট অনুসন্ধান ফলাফলে উচ্চতর স্থানে আসবে না। এছাড়াও, নিম্নমানের আর্টিকেলগুলোতে প্রয়োজনীয় কিওয়ার্ড নাও থাকতে পারে, যার ফলে আপনার টার্গেটেড ট্র্যাফিক হ্রাস পাবে।
  • সময় ও অর্থের অপচয়: নিম্নমানের আর্টিকেল তৈরি করতে সময় ও অর্থ লাগে। আপনি যদি নিজে নিজে নিম্নমানের আর্টিকেল তৈরি করেন তবে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। আর আপনি যদি অন্যদের দিয়ে নিম্নমানের আর্টিকেল তৈরি করান তবে আপনার অর্থ নষ্ট হবে।
  • আইনি ঝুঁকি: যদি আপনার আর্টিকেলে ভুল তথ্য, কপিরাইট লঙ্ঘন, বা মানহানিকর বিষয়বস্তু থাকে, তাহলে আপনি আইনি ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
উচ্চমানের আর্টিকেল লেখা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। এটি আপনার ওয়েবসাইটের খ্যাতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা উন্নত করতে, আপনার SEO-তে উন্নতি করতে, এবং আপনার ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।

৫. কীওয়ার্ড রিসার্চ না করা

আপনি যদি নির্দিষ্টি একটি বিষয় আর্টিকেল লিখতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনার সেই বিষয়টি সম্পর্কে ভালো ভাবে কীওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে হবে।প্রথম দিকে অনেক ব্লগাররাই এই বিষয়টি এড়িয়ে যান। কেননা কীওয়ার্ড রিসার্চ এসইওর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা কোন একটি আর্টিকেল লেখার আগেই করতে হয়।

কীওয়ার্ড রিসার্চ না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
  • ট্র্যাফিক এবং রূপান্তর হার হ্রাস: যদি আপনি সঠিক কীওয়ার্ডগুলি টার্গেট না করেন তবে আপনার ওয়েবসাইট বা বিজ্ঞাপনগুলি এমন লোকেদের কাছে দেখানো হবে যারা আসলে আপনার অফার করা পণ্য বা পরিষেবাগুলিতে আগ্রহী নয়। এর ফলে অবশ্যই ট্র্যাফিক এবং রূপান্তর হার উভয়ই হ্রাস পাবে।
  • অপ্রাসঙ্গিক ট্র্যাফিক বৃদ্ধি: ভুল কীওয়ার্ডগুলি টার্গেট করলে এমন লোকেরা আপনার ওয়েবসাইটে আসতে পারে যারা আসলে আপনার অফার করা কিছুই চায় না। এটি আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বৃদ্ধি করতে পারে, যা Google-এর কাছে একটি নেতিবাচক সংকেত এবং আপনার SEO-এর জন্য ক্ষতিকর।
  • বাজেট অপচয়: আপনি যদি কীওয়ার্ড গবেষণা না করেন তবে আপনি এমন বিজ্ঞাপনগুলিতে অর্থ ব্যয় করতে পারেন যা ভুল লোকেদের টার্গেট করে। এটি আপনার বিজ্ঞাপন প্রচারের ROI (রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট) হ্রাস করবে এবং আপনার বিপণন বাজেট অপচয় করবে।
  • গ্রাহক অসন্তুষ্টি: অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন বা ভুল তথ্য সরবরাহ করে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করা তাদের হতাশাজনক অভিজ্ঞতা তৈরি করতে পারে। এটি ব্র্যান্ড প্রতি বিশ্বাস হ্রাস করতে পারে এবং ভবিষ্যতে কেনাকাটা করার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে।
  •  SEO জটিলতা: Google ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্কিং বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে, যার মধ্যে রয়েছে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার। কীওয়ার্ড গবেষণা ছাড়া, একটি ওয়েবসাইট Google অনুসন্ধানের ফলাফলের শীর্ষে র‌্যাঙ্ক করতে সংগ্রাম করতে পারে।
পারফেক্ট কীওয়ার্ড রিসার্চ করে, আপনি অনেক সহজেই লাভজনক কীওয়ার্ডগুলোকে টার্গেট করে আর্টিকেল লিখতে পারেন। যার ফলে গুগল সার্চ থেকে অধিক পরিমাণে ট্রাফিক ও ভিজিটর পেতে সক্ষম হবেন। সেই ক্ষেত্রে কীওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আপনি গুগলের Google Keyword Planner ব্যবহার করতে পারেন।কেননা এটি সম্পূর্ণ ফ্রি হয়ে থাকে, ব্যবহার করা সহজ এবং অনেক কার্যকরী।

৬. কীওয়ার্ড অপটিমাইজ না করা

একটি ভালো মানের ব্লগের আর্টিকেলের জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চই শেষ কথা নয়। কীওয়ার্ড রিসার্চের পরে আবার আসে রিসার্চ করা কীওয়ার্ডটি আর্টিকেলের কোথায় কোথায় বসাবেন, সেই বিষয়টি। আপনার রিসার্চ করা কীওয়ার্ডটি আর্টিকেল লেখার সময় বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করতে হবে, এটাই মূলত কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন।

ভালোভাবে কীওয়ার্ড অপটিমাইজ না করার ফলে ভালো এবং মানসম্মত আর্টিকেল লেখা সত্ত্বেও আপনার আর্টিকেলগুলো গুগল সার্চ ইঞ্জিনের সেরা ১০ রেজাল্টে র‍্যাঙ্ক করবে না। একটি ভালো মানের আর্টিকেলের বিভিন্ন অংশ রয়েছে। যেমন: টাইটেল, সাব-টাইটেল, মেটা ডিসক্রিপশন, URL Address, Image Alt Tag ইত্যাদি।

কীওয়ার্ড অপটিমাইজ না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন (Keyword Optimization) হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের (SEO) একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যা আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ র‌্যাঙ্কিং উন্নত করতে সহায়তা করে। কীওয়ার্ড অপটিমাইজ না করলে আপনার ওয়েবসাইট নিম্নলিখিত ক্ষতিকর প্রভাবের সম্মুখীন হতে পারে।
  • কম ট্র্যাফিক: আপনার ওয়েবসাইট লক্ষ্যযুক্ত সার্চারদের কাছে পৌঁছাতে পারবে না, যার ফলে ট্র্যাফিক কম হবে। আপনার ওয়েবসাইটের প্রচারণা ও বিপণনের প্রচেষ্টা অকার্যকর হয়ে যাবে। আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের আয় ও বৃদ্ধি কমে যাবে।
  • কম সার্চ র‌্যাঙ্কিং: আপনার ওয়েবসাইট সার্চ রিজাল্টের প্রথম পাতায় প্রদর্শিত হবে না। আপনার প্রতিযোগীদের তুলনায় আপনার ওয়েবসাইট কম দৃশ্যমান হবে। আপনার লক্ষ্যযুক্ত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে আপনাকে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা করতে হবে।
  • কম রূপান্তর হার: আপনার ওয়েবসাইটে আসা লোকেরা আপনার প্রত্যাশিত ক্রিয়া সম্পাদন করবে না, যেমন কেনাকাটা করা, ফর্ম পূরণ করা বা সাইন আপ করা। আপনার ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনাকে আরও বেশি প্রচেষ্টা করতে হবে। আপনার ব্যবসার আয় ও লাভহানি কমে যাবে।
  • ব্র্যান্ড সচেতনতা কম: আপনার ওয়েবসাইট লক্ষ্যযুক্ত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে না পারলে, তারা আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানতে পারবে না। আপনার প্রতিযোগীদের তুলনায় আপনার ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা কম হবে। আপনার ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের বাজারে প্রভাব কমে যাবে।
  • অপ্রয়োজনীয় খরচ: আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক বাড়াতে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা করতে হবে, যা অতিরিক্ত খরচের সাথে জড়িত। আপনাকে পেইড অ্যাডভার্টাইজিং-এর মতো ব্যয়বহুল পদ্ধতি ব্যবহার করতে হতে পারে। আপনার ব্যবসার আয় কমে যাবে এবং লাভহানি বৃদ্ধি পাবে।
কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ SEO (Search Engine Optimization) কৌশল যা আপনার ওয়েবসাইটের ট্র্যাফিক, র‌্যাঙ্কিং এবং দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি করতে পারে। যদি আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সাফল্য নিশ্চিত করতে চান, তাহলে অবশ্যই কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন ব্যবহার করুন।

৭. Interlinking ব্যবহার না করা

একটি ওয়েবসাইটের এসইও প্রক্রিয়া প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে, একটি হচ্ছে অন পেজ এবং আরেকটি হচ্ছে অফ পেজ। আর Interlink অন পেজ এসইওর অন্তর্ভুক্ত এবং অন পেজ এসইওর ক্ষেত্রে Interlinking খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। Interlink পদ্ধতিতে আপনার ওয়েবসাইটেরই একটি আর্টিকেলের সাথে অন্য একটি আর্টিকেলের লিংকিং করতে হবে।

আপনার মনে রাখতে হবে, অন পেজ এসইও-তে Interlinking একটি সেরা মাধ্যম যা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে ভালো ফলাফল এনে দেয়। যার  ফলে কোন পাঠক একটি আর্টিকেল পড়া শেষ হতে না হতেই আরেকটি আর্টিকেল চোখের সামনেই পেয়ে যাবে,ফলে ওই পাঠক আপনার দেয়া আরেকটি আর্টিকেলের লিংকে ক্লিক করবে এবং এতে করে আপনার ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে।

Interlinking ব্যবহার না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
যদি আপনার ওয়েবসাইটে Interlinking প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেন তাহলে এটা আপনার জন্য মারাত্মক একটি ভুল। আপনার কনটেন্টের ভালো র‍্যাঙ্ক পেতে হলে এর Interlinking প্রক্রিয়া অনিবার্য।
SEO-এর ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব:
  • নিম্ন র‌্যাঙ্কিং: Interlinking সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু এবং কাঠামো বুঝতে সাহায্য করে। Interlinking ব্যবহার না করলে, আপনার ওয়েবসাইট Google-এর মতো সার্চ ইঞ্জিনে উচ্চ র‌্যাঙ্ক পেতে সমস্যা হতে পারে।
  • দুর্বল ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা: Interlinking ব্যবহারকারীদের আপনার ওয়েবসাইটে আরও সহজে নেভিগেট করতে এবং সম্পর্কিত বিষয়বস্তু খুঁজে পেতে সাহায্য করে। Interlinking না থাকলে, ব্যবহারকারীরা হতাশ হয়ে যেতে পারে এবং আপনার ওয়েবসাইট থেকে দ্রুত চলে যেতে পারে।
  • কম ট্র্যাফিক: Interlinking অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিক আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। Interlinking ব্যবহার না করলে, আপনার ওয়েবসাইটে কম ট্র্যাফিক আসতে পারে।
সামগ্রিক ওয়েবসাইটের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব:
  • বিচ্ছিন্ন বিষয়বস্তু: Interlinking আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুকে একসাথে সংযুক্ত করে এবং এটিকে আরও সুসংগঠিত করে তোলে। Interlinking ব্যবহার না করলে, আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু বিচ্ছিন্ন এবং অসংগঠিত বলে মনে হতে পারে।
  • ব্যবহারকারীদের জন্য কম আকর্ষণীয়: Interlinking আপনার ওয়েবসাইটকে আরও আকর্ষণীয় এবং মজাদার করে তুলতে পারে। Interlinking ব্যবহার না করলে, আপনার ওয়েবসাইট শুষ্ক এবং বিরক্তিকর বলে মনে হতে পারে।
  • ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন: Interlinking আপনার ওয়েবসাইটের ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে, যেমন বিক্রয় বৃদ্ধি বা লিড জেনারেট করা। Interlinking ব্যবহার না করলে, আপনার এই লক্ষ্যগুলি অর্জন করা কঠিন হতে পারে।
Interlinking আপনার SEO, ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা এবং সামগ্রিক ওয়েবসাইটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটের সর্বোচ্চ সম্ভাব্যতা অর্জন করতে চান তবে Interlinking অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত।

৮. সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করা

আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ব্লগারদের শুধুমাত্র ফেসবুক কেন্দ্রিক পাবলিসিটি করতে দেখা যায়। আর্টিকেল পাবলিশ করে শুধুমাত্র ফেসবুকে শেয়ার করাটাকেই অনেকে যথেষ্ট বলে মনে করে। কিন্তু এটা ভুল একটি কাজ। ফেসবুক থেকে আপনার অনেক বড় ধরনের একটি ভিজিটর আসবে এটা সত্য। কিন্তু তার পাশাপাশি অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়ও আপনার ব্লগের অস্তিত্ব টিকিয়া রাখতে হবে।

আপনার ব্লগের জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরবর্তীতে সেখানে আপানার লেখা পোস্টগুলোকে শেয়ার করতে হবে। শেয়ার করার জন্য আপনি পিন্টারেস্ট, লিংকডইন কিংবা টুইটারের মত প্লাটফরমগুলোকে বেছে নিতে পারেন। প্রাথমিকভাবে এসব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আপনি খুব বেশি ট্রাফিক পাবেন না।

কিন্তু ধীরে ধীরে আপনার শেয়ার করা সেই পোস্টগুলো সার্চ ইঞ্জিনে আসতে থাকবে। যেখান থেকে পরবর্তীতে আপনি অনেক ট্রাফিক পেতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও একটি ওয়েবসাইটের সকল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল তৈরি থাকলে ভিজিটরদের ওই ওয়েবসাইটের প্রতি আস্থা বাড়ে। যা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য খুবই ভালো এবং ইতিবাচক দিক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
  • সামাজিক সংযোগের অভাব: সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যক্তিগত ও পেশাদার উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপন ও বজায় রাখার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে অনুপস্থিত থাকা ব্যক্তিদের বন্ধু, পরিবার, সহকর্মী এবং সম্ভাব্য সহযোগীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ হারাতে পারে। তাছাড়া, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং একাকীত্বের অনুভূতি বৃদ্ধির ঝুঁকিও রয়েছে, বিশেষ করে যারা দূরবর্তী এলাকায় বসবাস করে অথবা সামাজিকভাবে নিষ্ক্রিয়।
  • তথ্য ও সুযোগের অ্যাক্সেসের অভাব: সোশ্যাল মিডিয়া বিভিন্ন ধরণের তথ্য, সংবাদ এবং সুযোগের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এটি ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং, পেশাদার উন্নয়ন, শিক্ষাগত সুযোগ এবং বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে সংযুক্ত থাকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে। যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না তারা এই সমস্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
  • ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এবং দৃশ্যমানতার অভাব: আজকের ডিজিটাল যুগে, অনলাইন উপস্থিতি এবং ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং ব্যক্তিগত ও পেশাদার সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শনের জন্য একটি কার্যকর মাধ্যম সরবরাহ করে। যারা এই প্ল্যাটফর্মগুলিতে অনুপস্থিত থাকে তারা তাদের লক্ষ্য দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে এবং তাদের কর্মজীবনে অগ্রসর হতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
  • মতামত প্রকাশ এবং সামাজিক প্রভাব ফেলার সীমিত সুযোগ: সোশ্যাল মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে মতামত এবং ধারণা প্রকাশ করার জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে অবদান রাখতে এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে ব্যবহার করা যেতে পারে। যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না তারা এই ক্ষেত্রে তাদের φωνή শোনানোর এবং তাদের সম্প্রদায়ে পার্থক্য তৈরির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকে।
শুধু ফেসবুকই না, অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়ও আপনার ওয়েবসাইটের নামে প্রোফাইল তৈরি করুন। সেগুলোর লিংক আপনার ওয়েবসাইটে সংযুক্ত করুন এবং নিয়মিত আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট সেখানে শেয়ার করতে থাকুন।

৯. গেস্ট ব্লগিং না করা

আপনার ওয়েবসাইটকে র‍্যাঙ্ক করার জন্য আপনাকে ব্যাকলিংক তৈরি করতে হবে, আর বেশি ব্যাকলিংকের জন্য আপনাকে গেস্ট ব্লগিং করতে হবে। ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্কের জন্য ব্যাকলিংক বিল্ড করা একটি কার্যকরী সমাধান। গেস্ট ব্লগিং হচ্ছে নিজের ব্লগের বাইরেও পরিচিত অন্যের ব্লগে লেখালেখি করা।

আপনি যদি পরিচিত অন্য কারো ব্লগে লেখালেখি করেন, তাহলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের লিংক সেখানে শেয়ার করার সুযোগ পাবেন। যা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অনেক ভালো একটা দিক। কিন্তু বেশিরভাগ ব্লগ লেখকরাই এটা নিয়ে খুব একটা ভাবেন না বা অন্য ব্লগে লেখার সুযোগ তৈরি করতে পারেন না।

গেস্ট ব্লগিং না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব
গেস্ট ব্লগিং অনলাইন উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং আপনার ব্র্যান্ডের জন্য নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। গেস্ট ব্লগিং না করার কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে-
  • ব্র্যান্ড সচেতনতা এবং আধিকারিকতার ক্ষতি: নিয়মিত গেস্ট ব্লগ পোস্ট করে, আপনি আপনার ব্র্যান্ডের নাম এবং বিশেষজ্ঞতার প্রচার করতে পারেন। এটি আপনার লক্ষ্য দর্শকদের মধ্যে বিশ্বাস এবং আস্থা তৈরি করতে সাহায্য করে। যদি আপনি গেস্ট ব্লগিং করেন না, তাহলে অন্যরা হয়তো আপনার পরিবর্তে এটি করবে। এর ফলে আপনার প্রতিযোগীদের জন্য সুযোগ তৈরি হতে পারে এবং আপনার ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা কমে যেতে পারে।
  • ট্রাফিক এবং লিড হ্রাস: উচ্চ-মানের গেস্ট ব্লগ পোস্টগুলি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আকর্ষণ করতে পারে। এটি নতুন লিড এবং গ্রাহকদের দিকে পরিচালিত করতে পারে। আপনি যদি গেস্ট ব্লগিং করেন না, তাহলে আপনি এই সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না। এর ফলে আপনার বিক্রয় এবং রাজস্ব হ্রাস পেতে পারে।
  • সম্প্রদায় তৈরি এবং সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ হারানো: গেস্ট ব্লগিং আপনাকে অন্যান্য ব্লগার, প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং আপনার শিল্পের বিশেষজ্ঞদের সাথে সংযোগ স্থাপন করার সুযোগ দেয়। এটি মূল্যবান সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং একটি শক্তিশালী সম্প্রদায় তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি গেস্ট ব্লগিং করেন না, তাহলে আপনি এই সুযোগগুলি হারাবেন। এর ফলে আপনার ব্যবসার জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে।
  • আপনার জ্ঞান এবং দক্ষতা ভাগ করার সুযোগ হারানো: গেস্ট ব্লগিং আপনাকে আপনার জ্ঞান এবং দক্ষতা অন্যদের সাথে ভাগ করার একটি দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। এটি আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং আপনার খ্যাতি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি গেস্ট ব্লগিং করেন না, তাহলে আপনি এই মূল্যবান শেয়ারিংয়ের সুযোগ হারাবেন।
  • নতুন ধারণা এবং অনুপ্রেরণা পাওয়ার সুযোগ হারানো: অন্যান্য ব্লগারদের গেস্ট পোস্ট পড়া আপনাকে নতুন ধারণা এবং অনুপ্রেরণা পেতে সাহায্য করতে পারে। এটি আপনার নিজের সামগ্রী এবং বিপণন প্রচেষ্টা উন্নত করতে পারে। আপনি যদি গেস্ট ব্লগিং করেন না, তাহলে আপনি এই শেখার এবং বৃদ্ধির সুযোগগুলি হারাবেন।
গেস্ট ব্লগিং একটি শক্তিশালী মার্কেটিং হাতিয়ার যা আপনাকে আপনার ব্র্যান্ডের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি করতে, নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে, আপনার জ্ঞান ভাগ করতে এবং আপনার লক্ষ্য দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করতে পারে।

১০.  ব্লগিং এর ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতার অভাব

বর্তমানে নতুন ব্লগাররা খুব অল্প সময়েই বেশি সাফল্য পাওয়ার চেষ্টা করে। যেটা আসলে কখনোই সম্ভব হতে পারে না। কেননা ব্লগিং এ সাফল্য পেতে হলে আপনাকে যথেষ্ট সময় ও শ্রম দিতে হবে এবং নিজের ব্যতিক্রমধর্মী মেধা প্রয়োগ করতে হবে। অনেককেই দেখা যায়, যারা নিজের ব্লগে নিয়মিত লেখা প্রকাশ করেন না, আবার মাসে দুই একটি আর্টিকেল পাবলিশ করলে ব্লগের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে না।

যেহেতু আপনার ব্লগ নিয়মিত আপডেট না রাখলে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ব্লগিং ওয়েবসাইটটি র‍্যাঙ্ক হারাবে। তাই দেরীতে এবং অনিয়মিত ব্লগ আপডেট করাটা একটি সাংঘাতিক বড় মাপের ভুল। যদি আপনি ব্লগিং এ সফল হতে চান এবং গুগল সার্চে অধিক ট্রাফিক পেতে চান, তাহলে আপনার নিজের ব্লগে নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করতেই হবে।

আপনি যদি আপনার ব্লগে নিয়মানুবর্তি না হন তাহলে সফলতা পেতে অনেক কষ্ট হতে পারে। তাই, নিজের ব্লগ নিয়মিত আপডেট রাখুন এবং প্রতি সপ্তাহে অন্তত সাতটি আর্টিকেল পাবলিশ করুন। সবশেষে ব্লগিং হচ্ছে একজন ব্লগারের মেধা প্রকাশের জায়গা। এটা হেলাফেলা করার মতো কোন কাজ না।

ব্লগিং এর ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতার অভাব কিছু সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব 
  • ব্লগের গুণমান হ্রাস: নিয়মিত ব্লগ পোস্ট না করলে ব্লগের বিষয়বস্তু পুরনো হয়ে যেতে পারে এবং পাঠকদের আগ্রহ হারিয়ে যেতে পারে। নিয়মিত আপডেট না হলে ব্লগের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যার ফলে ব্লগটি অনুসন্ধান ফলাফলে কম র‌্যাঙ্ক করতে পারে। ব্লগের ডিজাইন এবং লেআউট সময়ের সাথে সাথে পুরনো হয়ে যেতে পারে, যা ব্লগটিকে অপেশাদার এবং অপ্রাসঙ্গিক দেখাতে পারে।
  • পাঠকদের হতাশা: পাঠকরা যদি নিয়মিত নতুন বিষয়বস্তু না পায় তবে তারা হতাশ হয়ে যেতে পারে এবং ব্লগটি অনুসরণ করা বন্ধ করে দিতে পারে। যদি ব্লগ পোস্টগুলি ভুল তথ্য, বানানগুলো ভুল, বা খারাপভাবে লেখা হয় তবে পাঠকরা বিরক্ত হয়ে যেতে পারে এবং ব্লগটিকে বিশ্বস্ত উৎস হিসেবে বিবেচনা করা বন্ধ করে দিতে পারে। যদি ব্লগে স্প্যাম বা অন্যান্য অপ্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু থাকে তবে পাঠকরা ব্লগটি থেকে দূরে সরে যেতে পারে।
  • আয়ের সম্ভাবনা হ্রাস: যদি ব্লগটিতে নিয়মিত নতুন বিষয়বস্তু না থাকে তবে বিজ্ঞাপনদাতারা ব্লগে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী হবে না। যদি ব্লগের পাঠক সংখ্যা কম থাকে তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং অন্যান্য আয়ের মাধ্যমগুলি কম কার্যকর হবে। যদি ব্লগটির খ্যাতি খারাপ হয় তবে ব্র্যান্ডগুলি ব্লগারের সাথে অংশীদারিত্ব করতে আগ্রহী হবে না।
  • ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এর ক্ষতি: নিয়মিত ব্লগিং ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এর জন্য একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। কিন্তু যদি ব্লগটি অবহেলিত হয় তবে এটি ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং এর ক্ষতি করতে পারে। ব্লগটি যদি নেতিবাচক মন্তব্য এবং প্রতিক্রিয়াগুলির সাথে পূর্ণ থাকে তবে এটি ব্যক্তির খ্যাতির ক্ষতি করতে পারে।
অর্থাৎ, নিয়মিত ব্লগ পোস্ট আপলোড করলে আপনার ব্লগের SEO উন্নত হয় এবং সার্চ রেজাল্টে এর উচ্চতম র‌্যাঙ্কিং বৃদ্ধি পায় এবং পাঠকদের আগ্রহ ধরে রাখা যায় এবং তারা আপনার ব্লগে নিয়মিত ফিরে আসে। নিয়মিত ব্লগ লেখার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগিং লক্ষ্য অর্জনে সহজেই পৌঁছাতে পারেন।

লেখকের শেষ কথা

আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটিতে, আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে নষ্ট করে দিবে এমন ১০টি ভুল সম্পর্কে  যাবতীয় তথ্য কিছুটা হলেও জানতে পেরেছেন। ব্লগিং হচ্ছে একজন ব্লগারের মেধা প্রকাশের জায়গা। এটা হেলাফেলা করার মতো কোন কাজ না। আপনি যেহেতু এই পেশায় চলেই এসেছেন, তার মানে ধরে নিতে হবে আপনি অনেক কিছুই জানেন। তাই ব্লগের কার্যকারিতা আরো বৃদ্ধি করতে ওপরে উল্লেখিত ভুলগুলো সংশোধনের চেষ্টা করুন।

এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের তথ্য আরো জানতে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url